পড়াশোনার ফাঁকে ফলের বাগান করে সফল সিদ্দিক

https://www.bdcurrentnews24.com/wp-content/uploads/2022/07/ad-1.jpg

জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি//
ছোটবেলা থেকে গাছের সাথে সংখ্যতা ছিল সিদ্দিকের। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর
সময়ে বাগান পরিচর্যা করে সময় পার করতেন সিদ্দিক। পড়াশোনা শেষ করে বাড়িতে
এসে ত্বীনসহ ৩০ প্রজাতির ফলের বাগান করে সফল সিদ্দিক।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের লধাবাড়ি গ্রামের আমিনুর রহমানের
ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক। ভাউলারহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি শেষ করে
রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি ও ম্যানেজম্যান্ট বিভাগে স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।
বাগান করে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন
অনেক বেকার যুবকের। পড়াশোনার পাশাপাশি এমন উদ্যোগে সফল হওয়ায় সাড়া ফেলেছে
জেলাজুড়ে।
বাগান দেখতে আসা বন্ধু সুবল বলেন, পড়াশোনার জন্য আমি ঢাকায় থাকি। তার
বাগান দেখতে এলাম। বাগানটি দেখে আমি অভিভূত। লেবু, বরই, ত্বীন, আপেল,
দার্জিলিং কমলাসহ নানা ধরনের গাছ নিয়ে তার বাগান। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো
প্রায় সবগুলোতে ভালো ফলন এসেছে। এটি আসলে আমাদের বন্ধুমহলের গর্বের বিষয়।
চারা কিনতে আসা হুমায়ুন কবির বলেন, আমি ভাইয়ের কাছে কমলা, লেবু ও বরইয়ের
চারা নিতে এসেছি। এর আগেও কয়েকবার আমি এ বাগানে এসেছি। দেখে খুব ভালো
লেগেছে। আমিও অনুপ্রাণিত হয়ে বাগান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেজন্য বাগানে
ভালো জাতের চারার জন্য এসেছি। কিভাবে চারা গাছের যত্ন নিতে হয় তার
পরামর্শও নেব।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, সিদ্দিকের এমন উদ্যোগ আসলে
প্রশংসনীয়। সে একটি চমক সৃষ্টি করেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি মিশ্র ফল বাগান
করে ভালো আয় করছে। অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে।
বাগানকে আরও বড় করা কথা জানিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ছোটবেলা থেকে গাছ
ভালো লাগতো। শখ ছিল একটি বড় বাগান করব। গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে দেখি মানুষ
ছাদেও বাগান করছে। এতে করে আমার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। আমি পড়াশোনার
পাশাপাশি অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে বাগানের কাজ শুরু করি। আট মাস হতে না
হতেই আমি লাখ টাকা আয় করেছি। আগামী রমজান মাসে চার লাখ পিচ লেবু বিক্রি
হবে আশা করছি। আলাদা ফলও বিক্রি করেছি কয়েকবার। পাশাপাশি আমার বাগানে
ত্বীনফল, কমলা, বরই, ড্রাগন, সজনা, আপেল, লেবুসহ ৩০ প্রজাতির ফলের গাছ
রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে কিছুর গাছের ফল আমি বিক্রি শুরু করেছি। কিছু গাছের
ফল এক মাসের মধ্যে চলে আসবে। সবাই চাকরির জন্য ছুটলে তো হবে না। বরং
পড়াশোনার পাশাপাশি কোনো বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করলে সফল হওয়া যায়
বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, আমি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা নিয়ে এসে বাগানটি
করেছি। কেউ যদি বাগান করতে আগ্রহী হয় অবশ্যই আমি সহযোগিতা করব। বাগানের
পরিধি বাড়ানোর জন্য জায়গা প্রস্তুত করছি। এতে আয় বাড়ার পাশাপাশি অনেক
মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ বলেন,
অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা চাকরি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেন। তার মধ্যে একজন
শিক্ষার্থীর এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে
সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।

https://www.bdcurrentnews24.com/wp-content/uploads/2022/07/ad-1.jpg